দক্ষিণ ইউরোপে ভয়াবহ দাবানল এবং তীব্র তাপপ্রবাহে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে হাজারো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি, ফ্রান্স, গ্রিস, তুরস্ক, আলবেনিয়া, মন্টিনেগ্রো ও ক্রোয়েশিয়ার একাধিক এলাকায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল ও বলকান অঞ্চলে জারি করা হয়েছে রেড হিট অ্যালার্ট। স্পেনের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সেভিয়া ও কর্দোভায় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। পর্তুগালের দক্ষিণাঞ্চলেও একই তাপমাত্রার পূর্বাভাস রয়েছে।
মাদ্রিদের কাছে ত্রেস কান্তোস এলাকায় ঘোড়াশাল কর্মী দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন, যেখানে ঘণ্টায় ৭০ কিমি বেগে বয়ে যাওয়া বাতাস দাবানলকে আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে দেয়। কাস্তিয়া ও লিওন অঞ্চলে প্রায় ৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ৩০টির বেশি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দালুসিয়ার তারিফা এলাকায় হোটেল ও বাড়ি থেকে আরও ২ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। দাবানল নেভাতে এক হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
পর্তুগালে তিনটি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। ট্রানকোসো অঞ্চলের আগুন আংশিক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এক হাজার ৩০০ ফায়ারফাইটার ও ১৪টি বিমান কাজ করছে, মরক্কো থেকেও সহায়তা এসেছে।
ইতালিতে তীব্র গরমে এক শিশু মারা গেছে। সাড়ডিনিয়ায় একটি গাড়িতে অচেতন পাওয়া ৪ বছরের রোমানিয়ান শিশুকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়। রোম, মিলান ও ফ্লোরেন্সসহ অন্তত ১০ শহরে রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে।
ফ্রান্সের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এলাকায় তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্যারিস অঞ্চলে ৩৬ ডিগ্রি এবং রোন উপত্যকায় ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা হতে পারে।
গ্রিসে ১৫০টিরও বেশি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। জাকিনথোস দ্বীপ ও পশ্চিম আচাইয়া অঞ্চল থেকে ব্যাপক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় কিছু এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিওস দ্বীপে পর্যটকদের উদ্ধার করতে নৌকা পাঠানো হয়েছে।
তুরস্কে চানাক্কালে ও ইজমিরসহ কয়েকটি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মন্টিনেগ্রোতে আগুন নেভাতে গিয়ে এক সেনা নিহত হয়েছেন। আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও অন্যান্য বালকান দেশে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।
বছরের চতুর্থ তাপপ্রবাহে যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। লন্ডনে দুটি ঘাসের আগুনে ১৭ একরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের গ্রীষ্ম আরও উষ্ণ ও শুষ্ক হচ্ছে, যা দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র দাবানল মৌসুম তৈরি করছে।