মার্কিন প্রযুক্তি ধনকুবের ইলন মাস্ক এবার ‘মধ্যমপন্থি ৮০ শতাংশ জনগণকে’ প্রতিনিধিত্ব করতে পারে—এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর ফলে তার সাবেক মিত্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধ আরও তীব্র রূপ নিতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এএফপির বরাত দিয়ে আনাদোলু জানিয়েছে, গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ২২ কোটি অনুসারীর উদ্দেশে মাস্ক একটি জরিপ চালান।
সেই জরিপে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় কি আসেনি, যা বাস্তবে ৮০ ভাগ মধ্যমপন্থি মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করবে?’
মাস্কের ওই জরিপে ব্যাপক সাড়া মেলে। তিনি দাবি করেন, ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা তার প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এরপর তিনি আরেকটি পোস্টে লেখেন, ‘এটাই নিয়তি (This is fate)।’
নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’
মাস্ক পরে একজন অনুসারীর প্রস্তাব সমর্থন করেন।সেই প্রস্তাব অনুযায়ী নতুন দলের নাম হতে পারে ‘আমেরিকা পার্টি’—যা তার ‘America PAC’-এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
মাস্কের ওই PAC ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের পক্ষে ২৩৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল।
যদিও বাস্তবতা কঠিন বলেই মনে হচ্ছে। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন আইনগত ও প্রশাসনিক দিক থেকে অত্যন্ত জটিল।
দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন শর্ত পূরণ করে ব্যালট অ্যাকসেস পেতে হয়।
এছাড়া ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গেলে ব্যাপক সাংগঠনিক কাঠামো ও তহবিল দরকার।
রিপাবলিকানদের ভেতর থেকেই পরিবর্তন?
মাস্ক অপর এক পোস্টে একটি বিকল্প ধারণার প্রতি মনোযোগ দেন।সেখানে বলা হয়, বিদ্যমান কোনো বড় দলকে ‘ভেতর থেকে সংস্কার’ করা যেতে পারে।
এর উত্তরে সমর্থকরা কেবল লেখেন, ‘হুম...’
আসলেই কি দল ছাড়ছেন?
তবে এখনো পরিষ্কার নয় যে, মাস্ক আসলেই রিপাবলিকান পার্টি ত্যাগ করতে যাচ্ছেন, নাকি এটা কেবল একটি কৌশলগত চাপ প্রয়োগ।
মূলত ইলন মাস্কের এই উদ্যোগ ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির বহিঃপ্রকাশ। তবে এটি মধ্যমপন্থি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে একটি নতুন রাজনৈতিক পরিসর তৈরিরও ইঙ্গিত হতে পারে। যেখানে মাস্ক নিজেকে প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তবে এটি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা মাস্কের আসল রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সংগঠন গঠনের ক্ষমতা ও ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভর করবে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।