২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ০১:৫২:৫৪ পূর্বাহ্ন
অক্টোবরে পুরোদমে চালু থার্ড টার্মিনাল
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০১-২০২৪
অক্টোবরে পুরোদমে চালু থার্ড টার্মিনাল

চলতি বছরের অক্টোবরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালকে পুরোদমে চালু করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে দায়িত্ব পাচ্ছে জাপানের প্রতিষ্ঠান। আগামী জুলাইয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তি করবে বেবিচক। ওই প্রতিষ্ঠানের কাজের গতির ওপর নির্ভর করছে নির্ধারিত সময়ে টার্মিনাল চালু হওয়া।


বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চলতি বছরের অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল চালু করার পরিকল্পনা আছে। জুলাই মাসে জাপানি কোম্পানির সঙ্গে আমাদের চুক্তি হবে। এরপর তারা কাজ শুরু করবে। তাদের কাজের প্রস্তুতিতে যদি বিলম্ব হয়, তাহলে কিছুটা দেরি হতে পারে। এপ্রিলের মধ্যে সব ধরনের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়ে যাবে।’ গত বছরের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করেন। চোখ ধাঁধানো উদ্বোধনীর মাধ্যমে পর্দা ওঠে মেগা এই প্রকল্পের। এখন টার্মিনাল পুরোদমে চালুর অপেক্ষায় যাত্রীরা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে, তার যাত্রী ধারণক্ষমতা বছরে প্রায় ৭০ লাখ। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২ কোটির কাছাকাছি। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনাল ভবন ২ লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের। ভবনের ভিতরে রয়েছে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। নির্মাণাধীন টার্মিনালটিতে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এসকেলেটর লাগানো হচ্ছে। যারা বিমানবন্দরের ভিতরে দীর্ঘপথ হাঁটতে পারবেন না, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোতে বেশি যাত্রী প্রবাহের জায়গাগুলোতে এ এসকেলেটরগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি যাত্রীদের মসৃণ যাত্রার অভিজ্ঞতা দেবে। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রোরেল। থাকবে পৃথক একটি স্টেশনও। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রোরেলে করে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। এ ছাড়া ঢাকার যে কোনো স্টেশন থেকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে সরাসরি বিমানবন্দরে বহির্গমন এলাকায় যাওয়া যাবে।


টার্মিনালটির প্রতিটি ওয়াশরুমের সামনে থাকবে একটি করে বেবি কেয়ার লাউঞ্জ। এ লাউঞ্জের ভিতর মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিং বুথ, একটি বড় পরিসরে ফ্যামিলি বাথরুম থাকবে। এ ছাড়া শিশুদের খেলার জন্য স্লিপার-দোলনাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে। হেলথ ইন্সপেকশন সুবিধা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট-এইড রুম, নানা রোগের টেস্টিং সেন্টার ও আইসোলেশন এরিয়া থাকবে। টার্মিনালের ভিতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার এবং ঋণ হিসেবে জাপানের সংস্থা জাইকা দেবে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। থার্ড টার্মিনালের নকশায় পর্যাপ্ত সংখ্যক এসকেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হয়েছে। থাকছে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কারপার্ক। তিন তলাবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির স্থাপত্যরীতিতে আনা হয়েছে অনন্য নান্দনিকতা।


শেয়ার করুন