০৬ মে ২০২৪, সোমবার, ০৫:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন
পুষ্টি নিরাপত্তা ও খাদ্য রফতানির দিকে জোর দিচ্ছে সরকার
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৮-২০২৩
পুষ্টি নিরাপত্তা ও খাদ্য রফতানির দিকে জোর দিচ্ছে সরকার

দেশে কৃষি খাতের পরিবর্তন ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিনিয়োগ ফোরামের যাত্রা শুরু হয়েছে। রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম-২০২৩’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যনিরাপত্তা থেকে পুষ্টি নিরাপত্তা এবং খাদ্য রফতানির দিকে জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, গতানুগতিক কৃষি থেকে বের হয়ে এসে কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণে কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরী পোশাক হলেও আমরা এর বাইরেও কাজ করতে চাই। সরকার কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহ-আয়োজক ছিল জাতিসঙ্ঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও), ডেনমার্ক দূতাবাসের সিজিআইএআর, গ্লোবাল অ্যালাইন্স ফর ইম্প্রুভ নিউট্রিশন (জিএআইএন), ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি) ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ (ডব্লিউবিজি), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার এর সভাপতিত্ব করেন।


কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ার সাথে সাথে মানুষের পছন্দের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। মধ্যম আয়ের মানুষের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ভাত থেকে গোশত, মাছ, দুগ্ধজাত পণ্য ও ফলজাতীয় খাবারের প্রতি চাহিদা বাড়ছে। কৃষকের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তারা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন, তা মোকাবেলায় উদ্ভাবনীঅর্থনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম সেই সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।’

ড. রাজ্জাক বলেন, কৃষিকে বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাজারজাত করতে পারলে বাংলাদেশের কৃষি হবে আধুনিক এবং মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে।


বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং রফতানির সুযোগ প্রশমিত করতে দেশের কৃষি-খাদ্য ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন। যখন একটি দেশের উন্নয়ন চলমান থাকে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়, সেই দেশ তখন বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর কাছে আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে গঠিত এই বিনিয়োগ ফোরাম, যারা বিনিয়োগ করতে চান এবং যারা বিনিয়োগ থেকে লাভবান হতে পারেন, তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র তৈরি করতে সাহায্য করবে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম-২০২৩’ নির্বাচিত কৃষি খাতে কৌশলগত বিনিয়োগের সুযোগ, বিভিন্ন উদ্ভাবনী আর্থিক উপকরণ অনুসন্ধান এবং বেসরকারি বিনিয়োগকারী, দেশীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ সহজতর করবে। এই ফোরাম অভিজ্ঞতা শেয়ার এবং নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধির মাধ্যমে ফলপ্রসূ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে বাংলাদেশের কৃষি খাতকে শক্তিশালীকরণ এবং কৃষিখাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তন আনার জন্য বিনিয়োগ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা হবে। আলোচনার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে শস্য উৎপাদন এবং কৃষিব্যবস্থা, প্রাণিসম্পদ, মৎস্যসম্পদ, বন ও ল্যান্ডস্কেপ পুনরুদ্ধার, সেইসাথে সামগ্রিক সরকারি নীতিমালা।

ফোরাম-এটি হতে পারে একটি বার্ষিক ইভেন্ট, যা ইতালির রোমে গত বছর জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের ফলাফল। উভয় ফোরামই এফএও-এর হ্যান্ড-ইন-হ্যান্ড ইনিশিয়েটিভের অংশ যা জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করে এবং কৃষিখাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে। এই বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য এফএও ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও থাকবে।


শেয়ার করুন