২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, ১০:৩৪:০২ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা হবে ৫ লাখ টন চাল
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা হবে ৫ লাখ টন চাল

আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানির ক্ষেত্রে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা কমিয়ে আনা হচ্ছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক দরপত্র দাখিলের সময়সীমা হচ্ছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত। এ সময়সীমা কমিয়ে ১৫ দিন নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে। সময়সীমা কমিয়ে চলতি অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরণের একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।


দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৪ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৯ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন এবং আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হবে। আন্তর্জাতিক উৎসের মধ্যে সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) পর্যায়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে।


খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাজেটে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অর্থ সংস্থান রাখা হয়েছে। তবে অর্থ সংস্থান থাকলেও চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক উৎস থেকে চাল সংগ্রহের বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কোন পরিকল্পনা নেই। চলতি বোরো মৌসুমে সারা দেশে সন্তোষজনক ধান উৎপাদন হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিধারণ কমিটির সভায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৪ লাখ মেট্রিক টন ধান এবং ১২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অক্টোবরে আমনের উৎপাদন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পর প্রয়োজনে বৈদেশিক উৎস থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হবে।


খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারি পর্যায়ে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মজুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমতাবস্থায় খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে বহুবিধ উৎস থাকলে দ্রুত খাদ্যশস্য আমদানি করা সহজতর হয় এবং প্রতিযোগিতা মূল্যে খাদ্যশস্য ক্রয় করা সম্ভব হয়। এ কারণে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে উভয় পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়ে থাকে।


জানা গেছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বৈদেশিক উৎস থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। ওই অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ২০ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৯ লাখ ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৬ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে।


জানা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) পর্যায়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির বিষয়টি নীতিগত অনুমোদনের জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানির ক্ষেত্রে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক দরপত্র দাখিলের সময়সীমা হচ্ছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত। এ সময়সীমা কমিয়ে ১৫ দিন নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামীতে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র অনুষ্ঠেয় বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।


শেয়ার করুন