মধুপুরে আ. লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২০


, আপডেট করা হয়েছে : 24-06-2023

মধুপুরে আ. লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২০

 টাঙ্গাইলের মধুপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গ্যাস ও গুলি ছুড়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি, অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল, কাজী ডিজিটাল হাসপাতাল, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকে ঘিরে শুক্রবার (২৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মধুপুর শহরে পৃথক সমাবেশ পালনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা হয়।


বিবদমান দুই গ্রুপের এক পক্ষ স্থানীয় এমপি ও কৃষিমন্ত্রীর অনুসারী এবং আরেক পক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান আবুর সমর্থকরা। মধুপুর পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে যৌথভাবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আয়োজন করা হয়। মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি ও সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান আবু থানা মোড়ের দক্ষিণে পৃথকভাবে কর্মসূচির আয়োজন করেন। এ সভায় যোগ দিতে আসা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা পথিমধ্যে হামলার শিকার হন।

এ ঘটনাকে ঘিরে মধুপুরে উত্তেজনা দেখা দেয়।আহতরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লাউফুলা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে খলিলুর রহমান (৩২), দামপাড়া গ্রামের মোর্শেদের ছেলে মাসরাফি (২৩), ইদিলপুর গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (৬০), ভবানটেকী গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে সোয়াইফ (২০), গাংগাইর গ্রামের খালেদ আহমেদের ছেলে মাসরুর আহমেদ প্রিতম (৩০), দানবাবান্দা গ্রামের আহসান আলীর ছেলে চান মিয়া (৬৫)। আহতদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং ইদিলপুর গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেনকে (৬০) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মধুপুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান জানান, আলোকদিয়া ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল হোসেনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশায় মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের সমাবেশে আসার সময় থানা মোড়ে কিছু ছাত্র ও শ্রমিকনেতা তাঁদের ওপর হামলা চালান।


এ সময় তাঁর কাছে থাকা ৬০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। হামলাকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবুর নেতৃত্বাধীন কর্মী বলে দাবি করেন তিনি।এ ঘটনার পর মধুপুর পৌরসভার মেয়র সমর্থিত নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে থানা মোড়ের দিকে এগিয়ে আসে। এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সভা শেষে ছরোয়ার আলম খান আবুর নেতৃত্বাধীন মিছিলটি ফিরছিল। থানা মোড়ে মিছিল আসা মাত্রই ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এ সময় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। থানা মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়ির লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মধুপুরের দোকানপাট মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পার্শ্ববর্তী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ করা সম্পূর্ণ সংগঠনবিরোধী। তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার এখতিয়ার নেই। তার পরও মেয়রের নেতৃত্বে গাড়ি, মোটরসাইকেল, দোকান, হাসপাতাল ভাঙচুর এবং নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটিয়েছে।

মধুপুর পৌরসভার মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম করার অপরাধে কেন বহিষ্কার করা হবে না মর্মে শোকজ করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কার্যক্রম করার এখতিয়ার তিনি হারিয়েছেন। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির আয়োজন করে। এই সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের থানা মোড়ে আবুর  কর্মীরা হামলা করে আহত করে। পরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের শান্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।


মধুপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বলেন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও মারামারি হয়েছে। কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার