 
                                
                             
পাবনার ঈশ্বরদীতে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কম্পানি লিমিটেড (নেসকো) ভবন ঘেরাও করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। এ সময় ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কও অবরোধ করেন তারা। এতে মহাসড়কে দুই ঘণ্টা সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বসতবাড়ি-ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রতিবাদে বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ঈশ্বরদী সচেতন নগরবাসী ফোরামের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে ভুক্তভোগীরা আবাসিক প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) মো. আব্দুন নূরকে আগামী দুই দিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় বেঁধে দেন। বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েক শত নারী-পুরুষ অংশ নেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা সংগঠক সুলতান মাহমুদ খান বিদ্যুৎ অভিযোগ করে জানান, নেসকো ঈশ্বরদীর আবাসিক প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) মো. আব্দুন নূর চমর দুর্নীতিবাজ লোক।
নতুন মিটার সংযোগে মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া অনুমোদন দেন না। মালামাল ক্রয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন। অভিযোগকারী গ্রাহকদের সঙ্গে অসৎ আচরণ করেন। সেবাগ্রহীতাদের অহেতুক হয়রানি করেন।
বিদ্যুৎ আরো জানান, বেশ কিছুদিন যাবৎ ঈশ্বরদীতে প্রিপেইড মিটার না লাগানোর জন্য এক্সসিইএন আব্দুর নুরের নিকট লিখিত ও মৌখিকভাবে দাবি জানানো হয়। প্রথমে তিনি দাবি মেনে মিটার প্রতিস্থাপন স্থগিত করেন। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই তিনি প্রি-পেইড মিটার লাগানো শুরু করেছেন। তাকে প্রিপেইড মিটার না লাগানোর জন্য অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু তিনি চরম ঔদ্ব্যত্তপূর্ণ আচরণ করে তাদের জানান, এটা সরকারি প্রকল্প।
যেকোনো মূল্যে প্রিপেইড মিটার লাগানো হবে। বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন করে পুরো ঈশ্বরদীকে ধ্বংস করে ফেললেও প্রিপেইড মিটার লাগানো বন্ধ করা হবে না। এর পরই বিক্ষোভকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার কার্যালয় ঘেরাসহ ভাঙচুর করেন।
সচেতন নগরবাসী ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ফ ম রাজিবুল আলম ইভান জানান, বিগত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে বিদ্যুৎ বিভাগের মন্ত্রী-আমলারা দুর্নীতি ও লুটপাটের উদ্দেশ্যে সাধারণ মানুষের ওপর অবৈধ প্রি-পেইড মিটার চাপিয়ে দিয়েছিল। প্রি -পেইড মিটারের নামে মিটার ভাড়া, ডিমান্ড চার্জ, সার্ভিস চার্জ, সমন্বয় চার্জ ও ভ্যাট আদায়ের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুন নূর জানান, গ্রাহকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে জনস্বার্থে আপাতত প্রি-পেইড মিটার বসানো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইতোপূর্বে যে প্রি-পেইড মিটারগুলো গ্রাহকদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলো গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে খুলে এনে পূর্বের মতো মাসিক বিল সিস্টেমের মিটার প্রতিস্থাপন করা হবে।