৩ মাস দেশেই ছিলেন কাদের, পাঁয়তারা করছিলেন রাজনীতিতে ফেরার


, আপডেট করা হয়েছে : 26-05-2025

৩ মাস দেশেই ছিলেন কাদের, পাঁয়তারা করছিলেন রাজনীতিতে ফেরার

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। পালিয়ে আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। পাশাপাশি কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারাও পরিবারসহ আশ্রয় নেন ভারতে। নিজ নিজ প্রাণ বাঁচাতে যে যেখানে পেরেছেন লুকিয়ে ছিলেন।


ক্ষমতায় থাকাকালে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে মাঠ কাঁপানো কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চরম দুঃসময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন না। ক্ষমতাচ্যুতির দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও তিনি টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। অথচ আগে প্রায় প্রতিদিনই বিরোধী দলকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতেন তিনি।


সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের এক সাক্ষাৎকার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর কতদিন দেশে ছিলেন এবং দেশে অবস্থানকালীন কীভাবে রাজনীতিতে ফেরার পাঁয়তারা করছিলেন।


সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি বাংলাদেশেই ছিলাম তিন মাসের মতো। আমার একটা উদ্দেশ্য ছিল-ওখান থেকে কিছু করা যায় কিনা। কিছু একটা করা যায় কি না। দলকে সংগঠিত করা যায় কি না। বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক অসন্তোষ, কর্মচারীদের অসন্তোষ, প্রতিদিনই এগুলো লক্ষ্য করতাম। ক্ষোভগুলো তখন রাস্তায় নেমে আসছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস। সে সময় ভাবলাম-এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু করা যায় কিনা। এই চিন্তাতেই তিন মাস পেরিয়ে গেল।


ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরপর একে একে সবাই অ্যারেস্ট হচ্ছি। আমি তো নেত্রীর পরের, তখনই ২১২টা খুনের মামলায় আমি আসামি হয়ে গেছি। এ অবস্থায় অনেকে বলল, আবার এখান থেকেও অনেক অনুরোধ যাচ্ছিল আমি যেন সতর্কভাবে এদিকে চলে আসি। এভাবেই চিন্তা করলাম যে, আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। আমি ধরা পড়লে ওষুধ খাওয়াবে কে? তারপর অনেক কিছু ভাবনা-চিন্তা করে....।’


আওয়ামী লীগের অনেক নেতা গ্রেপ্তার হলেও কাদের কীভাবে দেশ ছাড়তে পারলেন, সাক্ষাৎকারে তিনি সেটা খোলাসা করেননি।


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃত্ব স্থানীয় নেতারা। অভ্যুত্থানের পর থেকে হদিস ছিল না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। সরকার পতনের নয় মাস পর প্রথমবারের মত দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর কণ্ঠ শোনা গেল ইন্টারনেটে।


ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দমন-পীড়নের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত ওবায়দুল কাদেরের নামেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


এদিকে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি সেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ এখন নিষিদ্ধ দল এবং ওবায়দুল কাদের সেই দলের পলাতক এক নেতা, যার মাথার ওপর কয়েকশ হত্যা মামলা ঝুলছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার