বাগমারায় নৌকার প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনী হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতা আহত


, আপডেট করা হয়েছে : 14-12-2023

বাগমারায় নৌকার প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনী হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতা আহত

রাজশাহীর বাগমারায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশকে ক্রমেই উতপ্ত করে তুলছেন নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের রুহিয়া মামুদপুর মোড়ে অবস্থিত আতাউর রহমানের চা স্টলে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি সাহেব আলী নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কৃষকলীগের কেন্দ্র কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এক মিটিং এর আয়োজন হয়।


দুপুরে মিটিং হওয়ার কারণে লোকজন আতাউর রহমানের চা স্টলের উদ্দেশ্যে আসতে থাকে। লোকজন মিটিং স্থলে আসার আগেই পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ৫-৬টি মটর সাইকেলে চেপে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এর ১০-১২ জন সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা পিস্তল সহ আতাউর রহমানের চা স্টলের সামনে হাজির হয়। তারা দ্রুত মটর সাইকেল থেকে নেমে পিস্তল আর লাঠিসোটা নিয়ে চা স্টলের ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় নৌকার প্রার্থীর চার ক্যাডার লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করলেও অন্যরা রাস্তার উপরে অবস্থান নেয়।


পরে সাহেব আলীকে একা পেয়ে পিটিয়ে জখম করে ক্যাডাররা। ক্যাডারের লাঠির আঘাতে সাহেব আলীর কানের পিট ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। সেই সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সাহেব আলী। লাঠি দিয়ে পিটানোর সময় হামলাকারীরা বলেন সাহেব আলীর পায়ে গুলি করে দে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। গুলি করতে পারে এমন ভয়ে সাহেব আালীকে উদ্ধার করতে আসতে পারেননি স্থানীয়রা।


হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়িগ্রাম গ্রামের সকের আলীর ছেলে আফাজ উদ্দীন, আউচপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম দৌলতপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে মুস্তাক, কানাইশহর গ্রামের রেজাউল এবং মজোপাড়া গ্রামের জাকারিয়া। তারা সবাই অবসর প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি সাহেব আলীর উপর হামলা চালিয়ে মুমূর্ষুূ অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত কমিটির সকল কাগজপত্রাদী নিয়ে যায় তারা। সাহেব আলীকে আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন প্রথমে রুহিয়া মামুদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে নেয়। পরে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সিনেমা স্টাইলে মটর সাইকেল নিয়ে এসে সাহেব আলীর উপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার সময় সাহেব আলীর আত্মচিৎকার শুনতে পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। স্থানীয়দের উপস্থিতি দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীরা হাট গাঙ্গোপাড়া বাজারের দিকে পালিয়ে যায় বলে জানান তারা। উল্লেখ্য, নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নিজেও স্বতন্ত্র প্রার্থী তিন বারের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক সহ তাঁর হয়ে যারা নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তাদেরকে পৃথিবী থেকে শেষ করে দেয়ার হুমকী প্রদান করেন। ওই হুমকীর ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। হামলার ঘটনায় আহত কৃষকলীগ নেতা সাহেব আলী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবেন বলে জানাগেছে।


এদিকে খবর পেয়ে হাট-গাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রতন কুমার সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা স্বতস্ত্র প্রার্থীর পক্ষের এক নেতাকে পিটিয়ে আহত করেছে। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক বলেন এমপি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে কিভাবে নৌকার ক্যাডার বাহিনী স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের উপর হামলা চালাতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হবে।


এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার