রাজশাহীতে রাত জেগে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা


, আপডেট করা হয়েছে : 12-12-2023

রাজশাহীতে রাত জেগে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা

বাজারে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম। অনেক এলাকায় খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হচ্ছে। চুরি ঠেকাতে চাষিরা খেতে পাহারা বসিয়েছেন। রাত জেগে তাঁরা তাঁবুতে বসে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন। এই চিত্র রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার অনেক এলাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিদিরপুর বাজারে গত রোববার প্রতি কেজি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ টাকা এবং তাহেরপুরী পেঁয়াজ ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে এই হাটে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছির ১০০ টাকা।উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের কৃষক হযরত আলী পেঁয়াজ চুরির ভয়ে জমির পাশে তাঁবু গেড়ে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, তিনি তাঁবুর সামনে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ১০ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, সেখানে অন্তত ৫০ মণ পেঁয়াজ পাবেন।

এখানে হযরত আলীর ১০ বিঘা জমিতে ফসল রয়েছে। পেঁয়াজ ছাড়াও ভুট্টা, শর্ষে ও টমেটো চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে পাইকারি ক্রেতারা এসেছিলেন। তাঁরা ১৩০ টাকা কেজি দরে দাম দিতে চেয়েছেন। কিন্তু পরিপক্ব না হওয়ায় তিনি পেঁয়াজ বিক্রি করেননি। আশা করছেন পেঁয়াজ আরও বড় হবে, দামও বেশি পাবেন।খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি। পেঁয়াজ পরিপক্ব হতে ১০-১৫ দিনসময় লাগবে।

বেনীপুর গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনিও ওই জমিতে ২৪ ঘণ্টা পাহারা বসিয়েছেন। তিনি বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই পেঁয়াজ নিয়ে একটু উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। চুরি হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় পাহারা জোরদার করতে হয়েছে।উপজেলার পৌর এলাকার চাষি গোলাম রাব্বানী পাঁচ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর জমি থেকে ছয় মণ পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। এর পর থেকে তিনি জমিতে পাহারা বসিয়েছেন।

এ ছাড়া গত কয়েক দিনে ঈশ্বরীপুর ব্লকের গলাই গ্রাম, ধামিলা গ্রাম, হাতীবন্ধা গ্রামের কয়েকজন কৃষকের খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জেলায় এবার ৯ হাজার ৭৫০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২০ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে আড়াই শ বিঘা থেকে পেঁয়াজ তোলা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ মণ।কৃষকের পেঁয়াজ পাহারা দেখতে সন্ধ্যায় হরিশংকরপুর মাঠে এসেছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমদ। তিনি বলেন, খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবে বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার খবর শুনে চাষিরা পেঁয়াজ তোলার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন। পেঁয়াজ পরিপক্ব হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তখন বিঘাপ্রতি ফলন অন্তত দেড় শ মণ হতে পারে। এখনো পেঁয়াজের গাছ সবুজ রয়েছে। পরিপক্ব বা উপযুক্ত মানে হারভেস্টিংয়ের সময় এই গাছ সবুজ থাকবে না। নরম হয়ে হেলে পড়বে। একটি পেঁয়াজ মোটামুটি ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হবে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার